১২:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

লন্ডন ত্যাগ করে আজ দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া

Md Reyadh
  • আপডেট সময় ০৭:৩৯:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • / ৩৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ৪ মাসের চিকিৎসা শেষে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে আজ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য সায়রুল কবির খানের বরাতে জানা গেছে, তিনি ২০২৫ সালের ৫ মে (সোমবার) রাত ৯:৩৫ মিনিট (স্থানীয় সময়) কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ বিমান অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা যাত্রা শুরু করেন। উল্লিখিত বিমানটি প্রথমে দোহা (হামাদ) বিমানবন্দরে রাত ১:২৫টায় অবতরণ করবে এবং সেখান থেকে প্রায় এক ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত বিরতির পর আবার ঢাকা ছেড়ে দেবে।

রওনা হওয়ার সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন তার দুই কন্যাজামাইমা ডাঃ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান, ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর এ. জে. এম. জাহিদ হোসেন, বিএনপির নেতা ট্যাবিথ আউয়াল, উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী এবং তাঁর সহকারী ফাতেমা প্রভৃতি। তার ছেলে ও দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে হাতে রাত ৭টার দিকে গুলশানের বাড়ি থেকে মাকে নিয়ে বিমানবন্দর পৌঁছান। এছাড়া বাসার অত্যন্ত বিশ্বাসী नौকর ফাতেমা এবং প্রাক্তন স্বামীর স্ত্রী কোকো’র স্ত্রী শামিলা সরকারের দীর্ঘদিনের ভাড়া গাড়িও অনুসরণ করে গিয়েছিল।

ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহর থেকে আগত বেশ কিছু শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী হিথ্রো বিমানবন্দরে সমবেত হয়ে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানিয়েছেন। বিএনপি ব্রিটিশ শাখা নেতারা বিমানবন্দর চত্বরে পৃথক সমাবেশের আয়োজন করেছিল। বিএনপি প্রেস উইংয়ের শামসুদ্দীন দিদারের বরাতে জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে এবং লন্ডন ও দোহায় বাংলাদেশের হাইকমিশনের মাধ্যমে তাঁর দেশে প্রত্যাবর্তনের আনুষ্ঠানিক বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

ঢাকায় পৌঁছানোর সময় সকাল ১০টার দিকে আবর্তে থাকার কথা। মুহূর্তগুলো যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, সে জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে – গুলশান ও বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে এবং যাতায়াতকারীদের বিকল্প পথ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। BNP-র পক্ষ থেকেও বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে; কেন্দ্রীয় নেতারা বিমানবন্দরের পথে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে অভ্যর্থনার ব্যাবস্থা নিশ্চিত করেছেন। জেলা শহর থেকে আগত নেতাকর্মীরা নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নেবেন এবং কর্ণফুলী থেকে মিরপুর পর্যন্ত প্রতিটি গলিতে জাতীয় পতাকা ও বিএনপি পতাকা হাতে রেখে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাবেন। বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, সড়ক অবরোধ বা অবৈধ প্রবেশ চলাচলের কোন অনিষ্ট যেন না হয়; বরং সবাই ফুটপাতে দাঁড়িয়ে কুচকাওয়াজ দেখিয়ে নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়েছে। খালেদা জিয়া ৮ জানুয়ারি ২০২৫ সালে উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের বিশেষ বিমান অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান। প্রথম ১৭ দিন তিনি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি ছিলেন এবং তারপর থেকে তার ছেলে তারেক রহমানের গুলশানের বাসায় চিকিৎসা চলছিল। দীর্ঘদিন ধরে তিনি লিভারের সিরোসিস, হৃদরোগ এবং কিডনি সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন। তাই দেশ-বিদেশের চিকিৎসক ও প্রশাসন মিলে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেন।

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-সমর্থকরা আনন্দিত। বিকেল-আগত ইতোমধ্যে পুরানো দিনের চিহ্নপুর্ন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে – বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশানের ফাইরোজা বাসভবন পর্যন্ত অভ্যর্থনার জন্য রাস্তা মোড়ক করা হয়েছে। খবর পাওয়া যাচ্ছে, মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভ্যর্থনার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া দেশের মাটিতে ফেরার কথা।

ট্যাগস :

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

লন্ডন ত্যাগ করে আজ দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া

আপডেট সময় ০৭:৩৯:০৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ৪ মাসের চিকিৎসা শেষে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে আজ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য সায়রুল কবির খানের বরাতে জানা গেছে, তিনি ২০২৫ সালের ৫ মে (সোমবার) রাত ৯:৩৫ মিনিট (স্থানীয় সময়) কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ বিমান অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা যাত্রা শুরু করেন। উল্লিখিত বিমানটি প্রথমে দোহা (হামাদ) বিমানবন্দরে রাত ১:২৫টায় অবতরণ করবে এবং সেখান থেকে প্রায় এক ঘণ্টার সংক্ষিপ্ত বিরতির পর আবার ঢাকা ছেড়ে দেবে।

রওনা হওয়ার সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন তার দুই কন্যাজামাইমা ডাঃ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান, ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর এ. জে. এম. জাহিদ হোসেন, বিএনপির নেতা ট্যাবিথ আউয়াল, উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী এবং তাঁর সহকারী ফাতেমা প্রভৃতি। তার ছেলে ও দলীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজে হাতে রাত ৭টার দিকে গুলশানের বাড়ি থেকে মাকে নিয়ে বিমানবন্দর পৌঁছান। এছাড়া বাসার অত্যন্ত বিশ্বাসী नौকর ফাতেমা এবং প্রাক্তন স্বামীর স্ত্রী কোকো’র স্ত্রী শামিলা সরকারের দীর্ঘদিনের ভাড়া গাড়িও অনুসরণ করে গিয়েছিল।

ইংল্যান্ডের বিভিন্ন শহর থেকে আগত বেশ কিছু শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী হিথ্রো বিমানবন্দরে সমবেত হয়ে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানিয়েছেন। বিএনপি ব্রিটিশ শাখা নেতারা বিমানবন্দর চত্বরে পৃথক সমাবেশের আয়োজন করেছিল। বিএনপি প্রেস উইংয়ের শামসুদ্দীন দিদারের বরাতে জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে এবং লন্ডন ও দোহায় বাংলাদেশের হাইকমিশনের মাধ্যমে তাঁর দেশে প্রত্যাবর্তনের আনুষ্ঠানিক বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

ঢাকায় পৌঁছানোর সময় সকাল ১০টার দিকে আবর্তে থাকার কথা। মুহূর্তগুলো যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, সে জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে – গুলশান ও বনানী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে এবং যাতায়াতকারীদের বিকল্প পথ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। BNP-র পক্ষ থেকেও বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে; কেন্দ্রীয় নেতারা বিমানবন্দরের পথে হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক নিয়ে সুশৃঙ্খলভাবে অভ্যর্থনার ব্যাবস্থা নিশ্চিত করেছেন। জেলা শহর থেকে আগত নেতাকর্মীরা নির্দিষ্ট পয়েন্টগুলোতে অবস্থান নেবেন এবং কর্ণফুলী থেকে মিরপুর পর্যন্ত প্রতিটি গলিতে জাতীয় পতাকা ও বিএনপি পতাকা হাতে রেখে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাবেন। বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, সড়ক অবরোধ বা অবৈধ প্রবেশ চলাচলের কোন অনিষ্ট যেন না হয়; বরং সবাই ফুটপাতে দাঁড়িয়ে কুচকাওয়াজ দেখিয়ে নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন হয়েছে। খালেদা জিয়া ৮ জানুয়ারি ২০২৫ সালে উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের বিশেষ বিমান অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে যান। প্রথম ১৭ দিন তিনি লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি ছিলেন এবং তারপর থেকে তার ছেলে তারেক রহমানের গুলশানের বাসায় চিকিৎসা চলছিল। দীর্ঘদিন ধরে তিনি লিভারের সিরোসিস, হৃদরোগ এবং কিডনি সমস্যাসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছিলেন। তাই দেশ-বিদেশের চিকিৎসক ও প্রশাসন মিলে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেন।

চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-সমর্থকরা আনন্দিত। বিকেল-আগত ইতোমধ্যে পুরানো দিনের চিহ্নপুর্ন সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে – বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গুলশানের ফাইরোজা বাসভবন পর্যন্ত অভ্যর্থনার জন্য রাস্তা মোড়ক করা হয়েছে। খবর পাওয়া যাচ্ছে, মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল ১০টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভ্যর্থনার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া দেশের মাটিতে ফেরার কথা।